আসন-সীমানা ফাঁদে উন্নয়ন বঞ্চিত মাগুরার ৪ ইউনিয়ন

আসন-সীমানা ফাঁদে উন্নয়ন বঞ্চিত মাগুরার ৪ ইউনিয়ন

মাগুরা থেকে: দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের প্রবেশদ্বার কৃষি নির্ভর জেলা মাগুরা। এ জেলার ৪টি উপজেলা মিলে দুইটি সংসদীয় আসন গঠিত। জেলার শ্রীপুর ও মাগুরা সদর নিয়ে ১ আসন গঠিত হলেও এই আসনের আওতায় আসেনি সদর উপজেলার শত্রুজিৎপুর, গোপালগ্রাম, কুচিয়ামোড়া, বেরইল পলিতা ইউনিয়ন।

মাগুরা সদরের ইউনিয়ন হয়ে সংসদীয় আসন-২ এর এরিয়ায় পড়ায় কপাল পুড়েছে এসব ইউনিয়নের মানুষের। দীর্ঘ সময় এই আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য থাকলেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এসব এলাকায়। ভঙ্গুর দশা রাস্তাঘাট, ও গ্রামীণ অবকাঠামোর।

স্থানীয়রা জানান, দুই আসনের আওতায় হওয়ায় জেলার সদরের কর্তৃপক্ষের উন্নয়ন মুলক কাজের আওতায় আসেনা সদর উপজেলার ৪ ইউনিয়ন। এদিকে জেলার সদর কর্তৃপক্ষের অপেক্ষায় কাজ করে না সংসদ সদস্যও। ফলে দীর্ঘ সময় উন্নয়ন বঞ্চিত চার ইউনিয়নের প্রায় ১ লাখ মানুষ।

সরজমিন ইউনিয়নগুলো ঘুরে দেখ গেছে, কাচা রাস্তাগুলোর বেহাল দশা। ইটের সলিং রাস্তাগুলো হয়ে পড়েছে চলাচলের অনুপযোগী। এছাড়া গ্রামীণ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এসব ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকায় নেই ড্রেনেজ ব্যবস্থা, পুকুরপাড় বাঁধসহ ইউ টার্নও। শুষ্ক মৌসুমে কিছুটা চলাচল করা গেলেও বর্ষাকালে একদমই চলা যায় না ইউনিয়নগুলোর বেশ কিছু সড়ক দিয়ে। ফলে দিনের পর দিন দুর্বিষহ কষ্টে দিন পার করছে এসব এলাকার মানুষ। ফলে আসন জটিলতার নিরসন করে এলাকার রাস্তাঘাট ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের তাগিদ সকলের।

আসন-সীমানা ফাঁদে উন্নয়ন বঞ্চিত মাগুরার ৪ ইউনিয়ন
ছবি: বার্তা২৪.কম


বিরল পলিতা ইউনিয়নের মমিনুর রহমান বলেন, এমপিরা ভোট নিতে আসে কথা দেয় আর চলে যায়। কথা কেউ রাখে না। আমরা মাগুরার হয়ে মোহাম্মদপুরের এমপির আওতায় আছি। এ জন্য আমাদের কোনো উন্নয়ন হয় না। আমাদের কপাল খারাপ।

শত্রুজিৎপুর ইউনিয়নের সোলেমান আলী বলেন, আমাদের ইউনিয়নসহ অন্য আরও বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন যাওয়ার প্রধান সড়ক নরাইল মাগুরা সড়ক, যেটার অবস্থা একদমই খারাপ। কেউ কাজ করে না এটাতে। এলাকার রাস্তাগুলোতে তো চলাচল করা মুশকিল। সব মিলে আমরাসহ আরও ৩ টা ইউনিয়নের মানুষ বঞ্চিত।

শরীফ নামের আরেকজন বলেন, আসন এরিয়া জটিলতায় কপাল পুড়ছে আমাদের। আমরা চাই আমাদের মাগুরা সদরের আওতায় নিয়ে, এলাকার উন্নয়ন করুক। অথবা যেই এমপি হোক যেন ভালোভাবে এলাকার কাজ করে এটাই চাওয়া।

ছবি: বার্তা২৪.কম


বেরইল পলিতা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এম এনামুল হক রাজা বলেন, এমপি এলাকায় কোনো কাজ করতে চান না। আমার ইউনিয়নের রাস্তা ঘাটের অবস্থা অনেক খারাপ। অনেক চেষ্টা করেও বরাদ্দ অনুদান মেলাতে পারি না৷ আমাদের চলাচলের প্রধান সড়ক নড়াইল মাগুরা সড়কের ৭-৮ কিলোমিটার রাস্তা একদম চলাচলের অনুপযোগী। আসন জটিলতা একটা বড় কারণ এখানে।

ছবি: বার্তা২৪.কম


এ বিষয়ে মাগুরা-২ আসনের সংসদ সদস্য বীরেন শিকদারের সাথে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে মাগুরা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আ.ন.ম. ওয়াহিদুজ্জামান জানান, ৪ ইউনিয়নের বেশ কিছু রাস্তা প্রজেক্টের আওতায় আছে। বরাদ্দ আসলে এসব এলাকায় রাস্তা ঘাটের উন্নয়ন করা হবে। ইতিমধ্যে একটি বড় বরাদ্দ আছে সেই বরাদ্দের আওতায় নেশ কথা কিছু কাজের প্রস্তুতি চলছে।

Scroll to Top