খুব সকালে আমাদের উঠতে হতো। আমি অবশ্য উঠতাম সাড়ে ৯টার দিকে। নাশতা করে চলে যেতাম নাচের ক্লাসে। নাচ, ভাষা, গান, সবকিছুর চর্চাই হতো। দুইটার দিকে অনুশীলন শেষ হতো।
আমি সত্যিই প্রাণপণ চেষ্টা করে গেছি; কারণ, অনেক দূর থেকে আমি এসেছিলাম। ব্যর্থ হতাম, তাহলে আবার আমাকে অস্ট্রেলিয়া ফিরতে হতো। জেদ, শৃঙ্খলা যে আমার মধ্যে আগে থেকেই ছিল, তা নয়। ওখানকার পরিবেশটাই এমন, এগুলো আমার মধ্যে তৈরি হয়ে গেছে।
দুই সপ্তাহের মধ্যে আমরা মাত্র এক দিন ছুটি পেতাম। ব্ল্যাকপিংকের আরেক সদস্য লিসাও সেই স্কুলে ছিল। আমরা এক রুমে থাকতাম। ও এসেছিল থাইল্যান্ড থেকে। ওরও যেহেতু সিউলে কোনো আত্মীয়স্বজন ছিল না, ছুটির দিনে দুজন একসঙ্গে ঘোরাঘুরি করতাম। চার্চে যেতাম, শপিংয়ে যেতাম। ঘুরে ঘুরে জর্ডানের দামি দামি স্নিকার্স দেখতাম আর ভাবতাম, ‘কী সুন্দর!’ কিন্তু আমাদের তো কেনার মতো টাকা ছিল না। ‘পরে কোনো একদিন কিনব,’ এই বলে মনে মনে নিজেকে সান্ত্বনা দিতাম।
পোশাক–আশাকটাও কিন্তু আমাদের প্রশিক্ষণের অংশ ছিল। সাপ্তাহিক, মাসিক পরীক্ষায় ফ্যাশনাটাও বিবেচনা করা হতো। বাসা থেকে যেটুকু টাকা পাঠানো হতো, তা দিয়েই কেনাকাটা করে ফিটফাট হয়ে আমরা নিজেদের প্রমাণ করার চেষ্টা করতাম।
ওয়াইজি এন্টারটেইনমেন্টে আমাদের সবই শেখানো হয়েছে। কিন্তু খ্যাতি কীভাবে সামাল দিতে হয়, সেটা শিখেছি নিজে। হয়তো মানসিকভাবে আমাদের সক্ষম মনে হয়েছিল বলেই ওরা আমাদের বেছে নিয়েছিল।
একাডেমিতে প্রায় চার বছর ছিলাম। সকাল-বিকেল-রাত—দিনের সবটা সময় গানের জন্য ঢেলে দেওয়া সেই দিনগুলো খুব মিস করি। এখন যখন প্রশিক্ষণার্থীদের দিকে তাকাই, খুব হিংসা হয়।