যে দলের হোক, ক্ষমতায় থাকা দলের হাতে নাগরিকের রক্তের দাগ লেগে আছে। সরকার যত কর্তৃত্ববাদী, যত অগণতান্ত্রিক, যত স্বৈরাচারী হয়েছে, রক্তের দাগ তত গভীর হয়েছে। সরকার ও রাষ্ট্র থেকে জনগণকে সম্পূর্ণভাবে বাদ দিয়ে সামরিক ও বেসামরিক আমলাতন্ত্র, রাজনীতিক ও সুবিধাভোগী ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর নেক্সাস যতটা শক্তিশালী হয়েছে, ক্ষমতা থেকে নামানো তত কঠিন হয়েছে। এখানে ক্ষমতার রাজনীতি তাই অবধারিতভাবে রাজপথের লড়াই হয়ে ওঠে, সেই ফয়সালায় নাগরিকের লাশ গুরুত্বপূর্ণ ‘হাতিয়ার’।
প্রচণ্ড রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে জন্ম নেওয়া বাংলাদেশের সমাজ সাড়ে পাঁচ দশক পরে এসে কেন প্রবলভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছে, তার কারণ খোঁজাটা সে কারণেই জরুরি রাজনৈতিক কর্তব্য হয়ে উঠেছে। কেননা, এ জরুরি প্রশ্নের সঙ্গে আমাদের অর্থনৈতিক বিকাশের প্রশ্নটিও অবিচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত।
ক্ষমতার রাজনীতির সঙ্গে যখন সমাজে কোনো রাজনৈতিক গোষ্ঠীকে অপর করে তোলার চেষ্টা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতাতেই চলতে থাকে, তখন সেই জনগোষ্ঠীর মধ্যে যে অনিরাপত্তা ও অনিশ্চয়তা বোধের জন্ম হয়, তারা সমাজ ও অর্থনীতির মূলস্রোত হয়ে উঠতে ভয় পায়। তাদের কেউ কেউ অর্থনীতিকে ক্ষতি করার জন্য সম্ভাব্য সব ধরনের উপায় বেছে নেয়। সম্ভাবনাময় অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে বাংলাদেশের দাঁড়াতে না পারার পেছনে রাজনৈতিক জনগোষ্ঠীকে অপর করে তোলার রাজনীতিও একটা বড় কারণ।