কলকাতা: দেশের বিভিন্ন জায়গায় আদিবাসী ছাত্রছাত্রীদের উপর আক্রমণ হচ্ছে বাদ নেই এই রাজ্যও। এমনই অভিযোগ সিপিআইএম-এর ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের। এরই প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে এসএফআই। শনিবার কলেজ স্ট্রিট কফি হাউসের সামনে এই কর্মসূচি করা হবে বলে সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে। সংগঠনের কলকাতা জেলা সভাপতি দেবাঞ্জন দে জানিয়েছেন, ‘‘সংখ্যাগুরুর আধিপত্যের ধারা গোটা দেশজুড়ে লাগু করেছে আরএসএস। গোটা দেশে বিজেপি সরকার কোণঠাসা করছে আদিবাসীদের। ডবল ইঞ্জিন রাজ্যে কার্যত আদিবাসী নিকেশ অভিযানে নেমেছে বিজেপি। বাংলায় তো ট্রিপল ইঞ্জিন, একই ছকে এখানেও তৃণমূল আক্রমণ করছে আদিবাসী মানুষদের। সবংয়ের ঘটনা তারই প্রতিচ্ছবি। রাজ্যে আদিবাসী ছাত্রছাত্রীদের স্কলারশিপ বন্ধ, হস্টেল বন্ধ, পড়াশোনার সুযোগ ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে। আরএসএস’র দলিত, আদিবাসী, সংখ্যালঘু নিধন মিশনের দুটো মাথা বিজেপি আর তৃণমূল!’’
এদিকে সংসদের একটি ঘটনাকে তুলে ধরে আইএসএফের চেয়ারম্যান তথা ভাঙড়ের বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকি এক প্রেস বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “মহাসমারোহে নতুন সংসদ ভবনে বিশেষ অধিবেশন হল। কিন্তু অধিবেশন চলাকালীন এক বিজেপি সাংসদ যেরকম বেনজির, নোংরা, কদর্য ভাষায় আরেক সাংসদকে গালাগাল করলেন সেটা বোধহয় সংসদের ইতিহাসে এই প্রথম। আমরা লক্ষ্য করছি বেশ কয়েক বছর যাবত ভারতে ‘ঘৃণার ভাষণ’ (Hate Speech) বাড়ছে। এই ঘৃণার ভাষণ মূলত মুসলিম, দলিত, আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতি করা হয়। লাইভ সম্প্রচারে দেখা গেল, সেটা এখন সংসদ চত্বরেও প্রবেশ করেছে। চন্দ্রযান ৩ মিশন নিয়ে আলোচনা চলাকালীন দক্ষিণ দিল্লির বিজেপি সাংসদ রমেশ বিধুরি তাঁর ভাষণে স্পষ্ট করে দিয়েছেন সঙ্ঘ পরিবারের কুৎসিত মনোভাব। বিধুরি বিএসপি সাংসদ কুনওয়ার দানিশ আলি সম্পর্কে অসংসদীয় ও ঘৃণ্য কথাগুলি অবলীলায় ব্যবহার করলেন। এটাও চোখে পড়ল পাশে বসে বিজেপি’র প্রবীণ নেতা হর্ষ বর্ধন ও রবিশঙ্কর প্রসাদ নির্লজ্জের মতন হাসছেন। আমি মনে করি রমেশ বিধুরির দ্রুত সাংসদ পদ খারিজ করা হোক এবং তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হোক। আমি আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছি তাঁর কথাগুলি রেকর্ড থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তার বিরুদ্ধে এখনও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, না সংসদ থেকে, না তার দলের তরফে।
আরও পড়ুন– খানাপিনায় দিলখুশ! হায়দরাবাদি বিরিয়ানি, মটন কারিতে মজেছেন বাবর আজমরা
ইতিমধ্যে ঘটনাটি প্রিভিলেজ কমিটিতে পাঠানোর জন্য দানিশ আলি-সহ বিরোধী সাংসদরা স্পিকারকে অনুরোধ করেছেন। তবে আমি বিজেপি’র কাছে এটা আশাও করি না যে তারা দলীয়স্তরে রমেশ বিধুরির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। একটা নামকাওয়াস্তে কারণ দর্শানোর নোটিস তারা যদিও এই সাংসদকে দিয়েছে। কিন্তু সেটা শাক দিয়ে মাছ ঢাকা ছাড়া আর কিছুই নয়। বিজেপিও দলীয়ভাবে এই সাংসদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করুক এবং সংসদে তার পদ খারিজের প্রস্তাবে সহমত জানাক। সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ঘৃণার চাষ করে, বিভেদের জাল বুনেই বিজেপি শাসন ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। কিন্তু আমরা এই ঘৃণার বাতাবরণকে ছিন্নভিন্ন করতে দেশের ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সমাজতান্ত্রিক আদর্শকে উর্ধ্বে তুলে ধরে বিরামহীন সংগ্রাম করে যাব।”
Published by:Siddhartha Sarkar
First published:
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।