বাফুফের ব্যাতিক্রমী আয়োজন। নির্বাচনের আট মাস পর ‘মিট দ্য প্রেস’ আয়োজন করল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। যেখানে সংস্থাটির সভাপতি তাবিথ আউয়াল কথা বললেন তার দায়িত্বের সাফল্য নিয়ে, অকপটে তুলে ধরলেন ব্যর্থতা। দেশের ফুটবলকে এগিয়ে নেয়ার প্রতিশ্রুতিও দিলেন। পাশাপাশি সরকারের কাছে কিছু দাবি-দাওয়াও তুলে ধরলেন।
রাজধানীর একটি ক্লাবে শনিবার গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। উপস্থিত ছিলেন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল এবং অন্য সদস্যরা।
সম্প্রতি ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের বাজেট পেশ হয়েছে। সেই বাজেটে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ হয়েছে দুই হাজার কোটি টাকার উপর। এত টাকার বাজেটের বড় অংশ ব্যয় হয় প্রশাসনিক খাতে। ক্রীড়ার উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণে বরাদ্দ তুলনামূলক কম। বাফুফের নতুন সভাপতি তাবিথ আউয়াল ক্রীড়া খাতে বাজেট বরাদ্দ ও ট্যাক্স আরোপ নিয়ে ক্রীড়া ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে শুরুতে তাবিথ বলেছেন, ‘বাজেটে ক্রীড়া খাতে বরাদ্দ হয় স্বল্প। সেটা সকল ফেডারেশনে বন্টনে আরো সীমিত হয়ে পড়ে। বাফুফের পক্ষ অনুরোধ যেন ক্রীড়া খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়।’
বরাদ্দ বৃদ্ধি ছাড়াও ক্রীড়া সামগ্রী ট্যাক্স নিয়ে বাফুফে সভাপতি বলেন, ‘ক্রীড়া সামগ্রী আনার ক্ষেত্রে ৩৬ শতাংশ ট্যাক্স দিতে হয়। যা ক্রীড়া বান্ধব নয়। একে তো ক্রীড়ায় বাজেট কম অন্য দিকে অতিরিক্ত ট্যাক্স। যা ক্রীড়া বান্ধব নয়।’
‘বিগত কমিটি বছরে ৩০ কোটি টাকা সরকারের কাছ থেকে চেয়েছিল। আমরা এখনো চাইনি। তবে আমাদেরও সেই রকম প্রয়োজন। আমরা স্পন্সর ও নানা মাধ্যম থেকে সেটা মেটানোর চেষ্টা করছি৷’ ট্যাক্স নিয়ে বাফুফে সভাপতি পার্শ্ববর্তী ভারতের উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘ভারতে ক্রীড়া সামগ্রীর উপর ১২ শতাংশ কর। আমাদের এখানেও ৩৬ শতাংশ থেকে কমে এ রকম করা যেতে পারে।’
বাজেটে করে অর্থ মন্ত্রণালয়। সেই বরাদ্দ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় বিভিন্ন ফেডারেশনে বন্টন করে। তাই বাফুফে সভাপতি দুই মন্ত্রণালয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘অর্থ ও ক্রীড়া দুই মন্ত্রণালয়ের কাছে বাফুফের পক্ষ থেকে অনুরোধ ক্রীড়া খাতে বাজেট বৃদ্ধি এবং ট্যাক্স কমানোর অনুরোধ করছি। আশা করি তারা এটি বিবেচনা করবেন।’
প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি নিয়ে বলতে গিয়ে বাফুফে সভাপতি স্বীকার করে নিয়েছেন নিম্ন মানের মাঠে প্রিমিয়ার লিগের খেলাগুলো আয়োজনের। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সামনের দিনগুলোতে এই দিকের উন্নতিতে।
‘আমাদের মাঠগুলো আমাদের চাওয়া অনুযায়ী উন্নত করতে পারিনি। জাতীয় স্টেডিয়াম আমরা ফিরে পেয়েছি। কিন্তু যে স্টেডিয়ামগুলো আমরা পেয়েছি লিগ চালানোর জন্য, চর্চা করার জন্য, সেগুলোর (মানের) কমতি আছে, সেটা আমরা মানি এবং স্বীকার করি। তবে আশা করি, আগামী ছয় মাসের মধ্যে এসব ক্ষেত্রে আমরা আপনাদের উন্নতি দেখাতে পারব।’
‘‘আমাদের দলের খেলা, মাঠ, জার্সি, ইকুয়েপমেন্ট ‘নিম্নমানের’ ছিল বলে অভিযোগ ছিল, সেখানেও আমরা উন্নতি করছি। এখন আমাদের চাওয়া বাংলাদেশ দল যখন মাঠে নামবে, তখন যেন পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারে, সেই উদ্যোগ নেওয়া হবে।’’