অবন্তিকার আত্মহত্যা: জবিতে একাধিক প্রতিবাদ সভা, কারাগারে শিক্ষক দ্বীন ইসলাম

অবন্তিকার আত্মহত্যা: জবিতে একাধিক প্রতিবাদ সভা, কারাগারে শিক্ষক দ্বীন ইসলাম

অবন্তিকার আত্মহত্যা: জবিতে একাধিক প্রতিবাদ সভা, কারাগারে শিক্ষক দ্বীন ইসলাম

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকাকে আত্মহত্যায় প্ররোচণার মামলায় একদিনের রিমান্ড শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিযুক্ত সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দুপুরে তাকে কুমিল্লার ১ নম্বর আমলি আদালতে হাজির করা হলে বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর সিদ্দিক দ্বীন ইসলামকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ওই শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে ক্যাম্পাসের ভাস্কর্য চত্বরে আজ প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা। সমাবেশে দোষীদের দ্রুত বিচারের কার্য পরিচালনার দাবি জানায় তারা। একইসঙ্গে এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্দেশ্যে লাল কার্ডও প্রদর্শন করে শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বরে ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়’ ব্যানারে আয়োজিত প্রতীকী সমাবেশে লাল কার্ড প্রদর্শন করা হয়।

প্রতিবাদ সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইভান তাহসীব বলেন, জগন্নাথে যেকোনো নিপীড়নের বিরুদ্ধে আমরা অবস্থান নিব। এখানে যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল থাকলেও তার কোনো কার্যক্রম নেই। এটি কার্যকর করতে হবে। এটিকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। সেখানে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি যুক্ত করতে হবে। যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে একটি সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। শুধু কিছু প্রতিশ্রুতি দিলে হবে না। 

এছাড়াও ক্যাম্পাসের মূল ফটকের সামনে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। এ প্রতিবাদ সমাবেশের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে প্রতিবাদে দাঁড়িয়েছিল কর্মজীবী নারীদের ব্যানারে একটি সংগঠনও।

প্রতিবাদ সমাবেশে মহিলা পরিষদের সভাপতির বক্তব্যে ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বারংবার সংঘটিত যৌন নিপীড়নের ঘটনা শিক্ষাঙ্গনকে চরম একটি বিব্রতকর অবস্থায় ফেলছে। আজ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা চরমভাবে বিঘ্নিত। মহামান্য হাইকোর্টের রায় অনুসারে গঠিত যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ কমিটিকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে এবং নারীর প্রতি অবমাননাকে সামাজিক অবমাননা হিসেবে দেখতে হবে। এছাড়া, নারীর কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে বলেও দাবি করেন তারা।

Open photo

সমাবেশ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির সাথে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের নেতৃবৃন্দ। এ সময়, অবন্তিকার মর্মান্তিক আত্মহননের ঘটনায় প্ররোচণাকারীদের সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়াম অবন্তিকার মৃত্যুতে শোক সভা করে আইন বিভাগ। শোক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য অধ্যাপক ড. সাহেকা হালিম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে যা যা করা সম্ভব আমি সব করছি। আমি সবসময় নারীদের নিয়ে কাজ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক থাকাকালীন আমি হলে হলে গিয়েও কাউন্সিলিং করেছি।

তিনি আরও বলেন, পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীদেরকে ছোট করে দেখা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী নিপীড়ন সেল কার্যকর করা হবে। আমি নিজ দায়িত্বে তা করব। এছাড়াও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অনুষদের ডিন এবং চেয়ারম্যানদেরকে নির্দেশ দেন যাতে, আজকের মধ্যে প্রতিটি বিভাগে যৌন নিপীড়ন অভিযোগ বক্স বসানো হয়।

/এমএইচ

Scroll to Top