নবীজি (সা.) মনে করলেন, তাঁর চাচা আর তাঁকে সহায়তা করতে চাচ্ছেন না, কাফেরদের মোকাবিলায় তাঁকে একাকী ছেড়ে দিচ্ছেন। তাই তিনি দৃঢ়কণ্ঠে বললেন, ‘যদি তারা আমার ডান হাতে সূর্য আর বাঁ হাতে চন্দ্রও তুলে দেয়, আর শর্ত হিসেবে যদি বলে এই দাওয়াতি কাজ ছেড়ে দিতে হবে, তবু আমি ছাড়ব না—যতক্ষণ না আল্লাহ আমাকে বিজয়ী করেন অথবা আমি শহিদ হয়ে যাই।’
এ কথা বলতে বলতে তাঁর চোখ ভিজে উঠল, তিনি কেঁদে ফেললেন। এরপর তিনি চলে যাবেন, এমন সময় আবু তালেব তাঁকে ডেকে বললেন, ‘ভাতিজা, তোমার যেভাবে ইচ্ছা দাওয়াতি কাজ চালিয়ে যাও। আল্লাহর কসম আমি কখনোই তোমাকে শত্রুর হাতে তুলে দেব না।’ (সীরাতে ইবনে হিশাম, বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার, ঢাকা, পৃ. ৬২)
আবু তালেব এরপর সব সময় নবীজি (সা.)–কে সহায়তা করে গেছেন। কাফেররা যখন নবীজি (সা.) ও মুসলমানদের সামাজিকভাবে বর্জন করে, আবু তালেবও তখন অন্য সব মুসলমানের মতো অনাহারে–অর্ধাহারে দিনযাপন করতে থাকেন, তবু ভাতিজাকে ছেড়ে দেননি। কিন্তু এত কিছুর পরও তিনি ইমান গ্রহণ করেননি। এটাই ছিল নবীজি (সা.)–এর সবচেয়ে বড় দুঃখ।
আবু তালেব যখন মৃত্যুশয্যায়, এমন সময় নবীজি (সা.) শেষবারের মতো তাঁকে দাওয়াত দিতে যান। ওখানে আগে থেকেই নেতৃস্থানীয় কাফেররা বসে ছিল।
নবীজি (সা.) আবু তালেবের কাছে গিয়ে বললেন, ‘চাচাজান, একবার শুধু লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলেন, এতটুকু বললেই আমি আল্লাহর সামনে (আপনার ইমানের বিষয়ে) সাক্ষ্য দেব।’
আবু জাহেল ও আবদুল্লাহ বিন আবু উমাইয়া বিন মুগিরা বলল, ‘আবু তালেব, তুমি কি (তোমার বাবা) আবদুল মুত্তালিবের ধর্ম ছেড়ে দেবে?’ তারা দুজনে বারবার এই কথা বলতে লাগল।