টিভি নাটকের পরিচিত মুখ, তরুণ প্রজন্মের স্টাইল আইকন, একাধিক জনপ্রিয় বিজ্ঞাপনের মুখ—সাবিলা নূর। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই তিনি সাবলীল অভিনয় আর প্রাণবন্ত উপস্থিতির জন্য দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। কিন্তু এবার তিনি নিজেকে চ্যালেঞ্জ করলেন আরও বড় পরিসরে।
ঈদের দিন মুক্তি পেল তার প্রথম সিনেমা ‘তাণ্ডব’, যেখানে তিনি প্রথমবারের মতো জুটি বেঁধেছেন ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খান-এর সঙ্গে। আর এই সিনেমার মাধ্যমেই শুরু হলো তার অভিনয়জীবনের এক নতুন অধ্যায়।
সিনেমা মুক্তির দিনটি ছিল সাবিলার জন্য একেবারেই বিশেষ। হলভর্তি দর্শকদের উচ্ছ্বাস দেখে তিনি নিজেই মুগ্ধ। ঈদের পর দিন সাবিলা বলেন, “এবারের ঈদের দিনটা আমার ক্যারিয়ারের স্মরণীয় একটি দিন হয়ে থাকবে। সিনেমার পর্দায় নিজেকে দেখে, আর দর্শকদের ভালোবাসা পেয়ে আমি কৃতজ্ঞ।”
বড়পর্দার অভিজ্ঞতা জানিয়ে রবিবার সাবিলা নূর বলেন, ঈদের আগের রাত থেকেই আমার নার্ভাসনেস শুরু, ঈদের দিন যখন সিনেমা হলে রওনা হচ্ছিলাম- তখনও ভীষণ নার্ভাস ছিলাম। কিন্তু হলে প্রবেশের পর সবাইকে দেখে, ‘তাণ্ডব’ নিয়ে দর্শকের উদযাপন দেখে নার্ভাসনেসটা এক্সাইটমেন্টে পরিণত হয়।
সাবিলা বলেন, ‘তাণ্ডব’-এর প্রতিটি মুহূর্ত দর্শক এনজয় করেছে। সিনেপ্লেক্সে বসেও দর্শক হাত তালি দিচ্ছিলো, সিটি বাজাচ্ছিলো- বিশেষ করে ‘লিচু বাগানে’ গানের সময়ে। আর শাকিব ভাইয়ের সাথে আমার রোমান্টিক গানটাও দর্শক এনজয় করেছে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দর্শকের এমন রিয়েকশন দেখতে পেরে এক্সাইটেডমেন্টটা অন্যরকম মাত্রায় পৌঁছে।
সাবিলা বলেন, সিনেমা শেষ হওয়ার পর দর্শকরা যেভাবে সিনেমাটির প্রশংসা করছিলেন, পুরো বিষয়টা আমার কাছে একেবারে ম্যাজিক্যাল বিষয় ছিলো। আমি মনে করি, এই দিনটা আমার পুরো ক্যারিয়ারের স্মরণীয় দিন হয়ে থাকবে।
সাবিলাকে নিয়ে দর্শকদের প্রতিক্রিয়াও ইতিবাচক। অনেকেই বলছেন, সাবিলা যতক্ষণ পর্দায় ছিলেন, এক মুহূর্তের জন্যও তার অভিনয়ে কৃত্রিমতা ছিল না। একজন দক্ষ চলচ্চিত্র অভিনেত্রীর যে আত্মবিশ্বাস ও স্বাভাবিকতা থাকা উচিত, তা নবাগতা সাবিলার মধ্যেই খুঁজে পেয়েছেন দর্শক!
শাকিব-সাবিলা জুটি নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখছেনও অনেকে। দুই প্রজন্মের এই তারকা জুটির রসায়ন দর্শকদের মনে দাগ কেটেছে! একজন দর্শকের ভাষায়, “সাবিলা বড়পর্দার জন্য একদমই প্রস্তুত ছিলেন। তার চোখের ভাষা, সংলাপের ডেলিভারি, আর স্ক্রিন প্রেজেন্স—সব মিলিয়ে সাবিলা নূর সিনেমার জন্য উপযুক্ত এক চমৎকার সংযোজন।”
এক যুগ ধরে ছোটপর্দায় সাবিলা নূরের যাত্রা। শুরুটা ছিল বিজ্ঞাপনচিত্রে, এরপর নাটকে, আর সেখান থেকে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছানো। কিন্তু বড়পর্দায় যাত্রা সহজ ছিল না। সাবিলা নিজেও স্বীকার করেছেন—চলচ্চিত্রে আসা মানে শুধু মাধ্যম পরিবর্তন নয়, এটা একেবারে আলাদা এক জগত। আলাদা প্রস্তুতি, আলাদা চাপ, আলাদা প্রত্যাশা। “আমি জানি দর্শক আমাকে ভালোবাসে, কিন্তু বড়পর্দায় সেই ভালোবাসা ধরে রাখা আরও বড় দায়িত্ব,” বলেছিলেন সাবিলা।
‘তাণ্ডব’ হয়তো সাবিলা নূরের প্রথম সিনেমা, কিন্তু এটি স্পষ্টভাবে দেখিয়েছে—তিনি বড়পর্দার জন্যও তৈরি। তার অভিব্যক্তি, অভিনয়ের পরিণত রূপ এবং ক্যামেরার সামনে সাবধানতা ও আত্মবিশ্বাস—সব মিলিয়ে ঢাকাই নায়িকাদের সঙ্গে সমানতালে চলার মতো মেধা ও আকর্ষণ তার রয়েছে। তাই দর্শকের প্রত্যাশা, “অভিনেত্রী সাবিলা নূরকে আগামীতে বিভিন্ন ধরনের মানসম্মত সিনেমায় নিয়মিতই অভিনয় করতে দেখা যাবে।”