কিশোরগঞ্জ, ২৭ জুলাই – জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, আমরা বুকের রক্ত দিয়ে ফ্যাসিক্ট সরকারকে পরাজিত করেছি। আর কোনো ফ্যাসিবাদ কায়েম হতে দেব না। অনেকেই নতুন করে চাঁদাবাজি করছে। সবাইকে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। নিজের বাবাও যদি দুর্নীতি করে, এর প্রতিবাদ করতে হবে।
শনিবার (২৬ জুলাই) রাতে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পুরান থানা এলাকার স্বাধীনতা চত্বরে জুলাই পদযাত্রা শেষে পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
হাসনাত আবদুল্লাহ্ বলেন, নিজের বাবাকে প্রশ্ন করতে হবে, তুমি ৩০ হাজার টাকা বেতন পাও, ৪০ হাজার টাকা বাসা ভাড়া দাও কী করে। আপনার ঠিকাদার বাবাকে প্রশ্ন করতে হবে, আপনার ব্যবসায়ী বাবাকে প্রশ্ন করতে হবে। নিজের ঘর থেকে শুদ্ধি অভিযান শুরু করতে হবে। আমরা তরুণ প্রজন্ম, আমরা এই শুদ্ধি অভিযানে থাকবো। প্রিয় কিশোরগঞ্জবাসী আমার এনসিপির কর্মীরা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের কর্মী থেকে আলাদা হতে হবে। আপনারা নিজেরাও দুর্নীতি করতে পারবেন না সেটা অন্যকেউ করতে চাইলে প্রতিহত করতে হবে। নিজেরাও টেন্ডার বাজী করবো না, অন্য কেউ করলে সেটাও প্রতিহত করতে হবে। তাছাড়া সাংগঠনিকভাবে আমাদের সুসংগঠিত হতে হবে।
ফিলিস্তিনে নারকীয় হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদ জানিয়ে এনসিপির এ মুখ্য সমন্বয়ক (দক্ষিণাঞ্চল) বলেন, আমি যখন কথা বলছি ঠিক এই মুহূর্তে লাইনে দাড় করিয়ে আমাদের ফিলিস্তিনি ভাইদের যাদের হাতে কোনো অস্ত্র নেই, যারা কোনো আগ্রাসন করতে আসেনাই, তারা কোন দখল করতে আসেনাই তাদেরকে ইসরায়েলি বর্বরোচিত শাসকরা পাখির মতো গুলি করে হত্যা করছে। প্রিয় কিশোরগঞ্জবাসী এই ইসরায়েলি বর্বরতার বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। বিশ্বমানবতার পক্ষে কথা বলতে হবে।
এ সময় হাসনাত আব্দুলাহ্ স্লোগান দেন ‘ফ্রি ফ্রি ফিলিস্তিন’। আজকে পর্যন্ত আমরা যারা সহযোদ্ধা হিসেবে পেয়েছি এরমধ্যে কিশোরগঞ্জের মানুষ অন্যতম। প্রিয় কিশোরগঞ্জবাসী আপনাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আপনাদের এই জমায়েত আমাদের বিশ্বাস করায় যারা এখন মামলা বাণিজ্য করছে, যারা এখন চাঁদাবাজি করছে, তাদের দিনও ফুরিয়ে আসছে। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি আমাদের এই তরুণ প্রজন্ম যদি ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারে তাহলে দুর্নীতিবাজরা পালানোর জায়গা পাবে না। প্রিয় কিশোরগঞ্জবাসী আপনাদের কিছু নসিহত করে যাবো, আপনারা যদি বাংলাদেশপন্থি বাংলাদেশ গড়তে চান প্রথমতো সবাইকে ঐক্যবদ্ধ তাকতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই রাষ্ট্রের কাছে, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমরা চেয়েছিলাম একটা পুনর্গঠিত রাষ্ট্রব্যবস্থা। আমরা ভেবেছিলাম ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে, কিন্তু দেখতে পেলাম মাইলস্টোনের ঘটনাকে পুঁজি করে আওয়ামী লীগ আবার পুনর্গঠিত হচ্ছে। প্রত্যেক রাজনৈতিক দলকে আহ্বান করবো, দেশের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলা করতে হবে।
সংস্কার ও নির্বাচনের বিষয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য আমরা যে সংস্কার প্রস্তাবগুলো দিয়েছি, এই সংস্কার প্রস্তাবের আশু বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দিকে যেতে হবে। সেটির পূর্বে দৃশ্যমান বিচার ও সংস্কার নিশ্চিত করতে হবে।
পথসভায় আরও বক্তব্য দেন— এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, হাসনাত আবদুলল্লাহ্, কেন্দ্রীয় মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা প্রমুখ।
সূত্র: ঢাকা পোস্ট
এনএন/ ২৭ জুলাই ২০২৫