ম্যাথুসের আউট কাণ্ডে চলছে যেসব আলোচনা

ম্যাথুসের আউট কাণ্ডে চলছে যেসব আলোচনা
ম্যাথুসের আউট কাণ্ডে চলছে যেসব আলোচনা

দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে এক নতুন ঘটনার সম্মুখীন হলো ক্রিকেট বিশ্ব। সেখানে চলছে বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা ম্যাচ। বিশ্বকাপের এই ম্যাচের গুরুত্ব পরের রাউন্ডের জন্য না থাকলেও, দুই দলের ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ক্ষেত্রে ভীষণ গুরুত্ব পাচ্ছে। আর সেখানে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের একটি আউট নিয়ে তৈরি হলো কাণ্ড। ক্রিকেট ইতিহাসে আন্তর্জাতিক আঙ্গিনায় প্রথমবারের মতো ‘টাইমড আউট’ হয়ে ফিরেছেন ম্যাথুস।

প্রথমে ব্যাট করতে নামা শ্রীলঙ্কা ৩ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপেই ছিল। তবে সেখান থেকে সাদিরা সামারাবিক্রমা ও চারিথ আসালাঙ্কা মিলে সেই চাপ কাটিয়ে ওঠে। দুইজন মিলে ৬৩ রানের জুটি গড়ার পর সামারাবিক্রমা আউট হয়ে ফিরলে, ক্রিজে আসেন ম্যাথুস।

ম্যাথুস যে হেলমেট নিয়ে মাঠে নামেন, তাতে তিনি খুব একটা নিরাপদ বোধ করেননি। এরপর তাঁর জন্য আরেকটি হেলমেট আনা হয়। সেটিতেও সমস্যা মনে হয় তাঁর।

ক্রিকেটের আইন প্রণেতা এমসিসি’র নিয়ম অনুযায়ী, ‘টাইমড আউট’ এর ব্যাপারে বলা আছে,

“উইকেট পতনের পর বা কোনো ব্যাটসম্যান রিটায়ার্ড হওয়ার পর, নতুন ব্যাটসম্যান ৩ মিনিটের মধ্যে পরবর্তী বল মোকাবিলা করবে। এই শর্ত পূরণ না করতে পারলে, নতুন ব্যাটসম্যান আউট হবেন। টাইমড আউট।”

তবে আইসিসি’র প্লেয়িং কন্ডিশনের নিয়ম অনুযায়ী, একজন নতুন ব্যাটারকে দুই মিনিটের মধ্যে ক্রিজে এসে নতুন বলের মুখোমুখি হতে হবে। সেখানে ম্যাথুস গরমিল করে ফেলেন।

তিনি হেলমেট বদলাতে গিয়ে নির্ধারিত সময় অতিক্রম করে ফেলেন। বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও সেখানে আবেদন করে বসেন। আর এই প্রেক্ষিতে আম্পায়ারের আউট দেওয়া ছাড়া অন্য কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার উপায় ছিল না।

এই সিদ্ধান্ত খুশি হতে পারেননি ম্যাথুস ও শ্রীলঙ্কা ম্যানেজমেন্ট৷ এটি ইতিহাসের প্রথম ‘টাইমড আউট’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। আর এমতাবস্থায় এই আউট নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে সবখানে চলছে নানা আলোচনা।

সাউথ আফ্রিকার সাবেক ফাস্ট বোলার ডেল স্টেইন ‘এক্স’ এ দেওয়া এক পোস্টে লিখেছেন, “ওয়েল, দ্যাট ওয়াজ নট কুল।”

ক্রিক-ইনফো’তে সামি নামে একজন লিখেছেন, “সাউথ আফ্রিকা অধিনায়ক গ্রায়েম স্মিথ ‘টাইমড আউট’ এর আবেদন করেননি, যখন ২০০৬-২০০৭ সালে নিউল্যান্ডসে শচীন ক্রিজে আসতে দেরি করে।”

শ্রীলঙ্কার ফ্যানরা এ বিষয়ে বেশ উত্তপ্ত রয়েছেন। তাঁরা ছাড়াও আরও অনেকেই মনে করছেন, এখানে ‘স্পিরিট অব ক্রিকেট’ এর কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি।

বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিবের প্রতিও ক্ষোভ ঝাড়ছেন অনেকে। তবে এর পাশাপাশি আরেক মতও রয়েছে। যেখানে অনেকেই বলছেন, নিয়ম অনুযায়ী এটি আউট। এখানে আর তেমন কিছু করার নেই, ভাবার নেই।

ক্রিকেট পরিসংখ্যানের জন্য জনপ্রিয় পাকিস্তানি মাজহার আরশাদ বলছেন, “সাকিব কোনো ভুল করেনি। সে একটা আউটের জন্য আবেদন করেছে, যা নিয়মে আছে।”

তিনি যোগ করেছেন, “অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের এটা বোঝা উচিত, এখানে স্পিরিটের কিছু নেই কারণ যখন তিনি ২০১৪ সালে অধিনায়ক ছিলেন, তখন সে সচিত্র সেনানায়কের করা মানকাডে জস বাটলারের উইকেটটি প্রত্যাহার করেননি।”

অনেকে বলছে, ম্যাথুসের এখানে আরও ‘স্মার্ট’ হওয়া প্রয়োজন ছিল। সাকিবের একটি স্পিন বল সে হেলমেট ছাড়াই মোকাবিলা করতে পারত। তখন এই ঘটনার সৃষ্টি হতো না।

এমন নানা আলোচনা ও সমালোচনা চলছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইতিহাসের এই প্রথম ‘টাইমড আউট’ এর ঘটনা নিয়ে। যেখানে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, ম্যাথুস, সাকিব’দের নাম উঠে রইল।

Scroll to Top