মহানবী (সা.) কীভাবে ভুল সংশোধন করতেন

মহানবী (সা.) কীভাবে ভুল সংশোধন করতেন

২. সৌজন্য বজায় রাখা

নবীজি সাহাবিদের প্রতি অত্যন্ত সংবেদনশীল ছিলেন। তিনি ভুল সংশোধনের সময়ও সৌজন্যবোধ হারাতেন না।

একবার এক বেদুইন মসজিদে প্রথমবার প্রবেশ করেন। তিনি উচ্চস্বরে দোয়া করেন, ‘হে আল্লাহ, আমাকে ও মুহাম্মদকে ক্ষমা করো, কিন্তু অন্য কাউকে ক্ষমা করো না।’ নবীজি (সা.) হাসেন ও সৌজন্যের সঙ্গে বলেন, ‘তুমি একটি বিশাল জিনিসকে সীমিত করছো।’

সেই লোকই বা অন্য কোনো লোক মসজিদের মেঝেতে প্রস্রাব করেন। নবীজি বিচলিত সাহাবিদের শান্ত করেন এবং লোকটিকে একা ছেড়ে দিতে বলেন। বেদুইন পরে বলেন, ‘আমার মা-বাবা তাঁর জন্য উৎসর্গ হোক। তিনি আমাকে তিরস্কার বা অপমান করেননি।’ তিনি কেবল বলেছেন, ‘এই মসজিদে প্রস্রাব করা যায় না, এটি নামাজ ও আল্লাহর স্মরণের স্থান। তারপর তিনি এক বালতি পানি এনে মেঝেতে ঢেলে দিতে বলেন।’ (সুনানে ইবন মাজাহ, হাদিস: ৫২৯)

৩. কৌশলী হওয়া

নবীজি অগ্রাধিকার বিবেচনা করতেন, সমস্যার সমাধান দিতেন এবং জানতেন কখন কঠোর বা নরম হতে হবে। তিনি বুঝতেন, কখন কেউ ভুলের পরিণতি বহন করতে পারবে।

মক্কা বিজয়ের পর আবু মাহজুরা নামের এক কিশোর ও তার বন্ধুরা বিলাল (রা.)-এর আজানের সময় তাঁর সঙ্গে ঠাট্টা করে। নবীজি তাকে ডেকে পাঠান। ভয়ে কাঁপতে থাকা কিশোরকে তিনি তিরস্কার করেননি। তিনি তার কণ্ঠ পরখ করেন, আজানের শব্দগুলো তাকে শেখান এবং তার বুকে হাত রেখে দোয়া করেন। আবু মাহজুরা পরে মক্কার মুয়াজ্জিন হিসেবে দায়িত্ব পান। (সুনানে ইবন মাজাহ, হাদিস: ৭১৫)

৪. অযথা কঠোরতা প্রয়োগ না করা

কখনো কখনো কঠোরতা ব্যক্তিগত সংশোধনের জন্য জরুরি। তিনি জানতেন কখন কঠোর বা নরম হতে হবে।

যখন দুজন সাহাবি পরনিন্দা করছিলেন, নবীজি কঠোর শব্দে বলেন, ‘তারা তাদের ভাইয়ের মাংস খেয়েছে, যা তাদের দাঁতের মাঝে দেখা যাচ্ছে। তারা নবীজির কাছে ক্ষমা চাইলে তিনি বলেন, তাদের ভাইয়ের কাছে ক্ষমা চাইতে।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৪,৮৮০)

আরেকবার তরুণ ফজল ইবন আল-আব্বাস (রা.) নবীজির সঙ্গে সওয়ার ছিলেন। এক সুন্দরী নারী প্রশ্ন করতে এলে ফজল তাকিয়ে থাকেন। নবীজি তাঁর চিবুক ধরে মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,২২৮)

Scroll to Top