বিশ্ব ড্রাকুলা দিবস: রক্তচোষা রোমাঞ্চের এক ভয়াবহ-মজার দিন!

বিশ্ব ড্রাকুলা দিবস: রক্তচোষা রোমাঞ্চের এক ভয়াবহ-মজার দিন!

ভাবুন তো, আপনি ঘুমাচ্ছেন। হঠাৎ ফিসফিস করে কেউ বলছে, ‘Excuse me… just a little sip please?’ কিছ বুঝে উঠার আগেই ‘টুপ করে’ গলায় বসিয়ে দিলো দাঁত। এমনটা যদি ঘটেই থাকে আজ। তবে অবাক হওয়া বা ভয় পাওয়ার কিছুই নেই। কারণ আপনার কাছের কোনো ড্রাকুলাপ্রেমী এই কাজটি আপনার সাথে আজ করতেই পারে। কারণ, আজ ২৬ মে বিশ্ব ড্রাকুলা দিবস।

প্রতি বছরই এই দিনে গোধূলি নামতেই ভ্যাম্পায়ারপ্রেমীরা বেরিয়ে পড়ে এক বিশেষ উপলক্ষে। আর সেটি হলো বিশ্ব ড্রাকুলা দিবস উদযাপনে। আজ সেই দিন, যেদিন গোটা পৃথিবী রক্তচোষা এক কাল্পনিক চরিত্রকে স্মরণ করে। যে সাহিত্যে, সিনেমায় ও সংস্কৃতিতে এক অমর অবস্থানে পৌঁছে গেছে।

কেন ২৬ মে?

১৮৯৭ সালের এই দিনে, ব্রাম স্টোকারের লেখা ড্রাকুলা (Dracula) উপন্যাস প্রথম প্রকাশিত হয়। আর এই উপন্যাস মানুষের মধ্যে আতঙ্ক আর কৌতূহলের এমন এক মিশ্রণ ঘটিয়েছে, যা আজও পাঠকদের শিহরিত করে। ভেবে দেখুন তো, সেই ১৮৯৭। আর আজ ২০২৫ সালে এসেও যে ড্রাকুলাকে ভুলা যায়না। বরং, সাহিত্য, গল্প বা সব ভাষার সিনেমা নাটকে নতুন রূপে হাজির হতে দেখা যায় এই ড্রাকুলাকে। তাই ২৬ মে, দিনটি পালন করতে ভূলেননা বিশ্ববাসী।

বিশ্ব ড্রাকুলা দিবস: রক্তচোষা রোমাঞ্চের এক ভয়াবহ-মজার দিন!

ড্রাকুলার ইতিহাস:

বইয়ের পাতা থেকে টিভির পর্দা পর্যন্ত ড্রাকুলা কেবল একটি চরিত্র নয়—তিনি এক অতিত কালের রাজপুত্র, এক রক্তপিপাসু রোমান্স নায়ক, কখনও ভিলেন, কখনও ভীতিকর প্রেমিক। ব্রাম স্টোকার তার চরিত্রটি তৈরি করেন ১৫শ শতকের ভ্লদা টেপেস নামক এক বাস্তব ইতিহাস-ভিত্তিক রোমানিয়ান রাজা থেকে। ভ্লদা টেপেস নামক এই রোমানিয়ান রাজা তার শত্রুদের খুঁটির মাথায় বসিয়ে মৃত্যুদণ্ড দিতেন (এটি সত্য ঘটনা)।

কীভাবে উদযাপন করা হয় এই ‘ভ্যাম্পায়ার ফেস্টিভাল’?

বিশ্ব ড্রাকুলা দিবস উদযাপন করার পদ্ধতিগুলো অনেকটাই গা-ছমছমে ও মজাদার:

ভ্যাম্পায়ার ফ্যাশন: ড্রাকুলার ফ্যাশন সেন্স একেবারে লন্ডনের রাজপুত্রদের মতো। এই ভদ্রলোক—মানে, ভ্যাম্পায়ার সাহেব—তিন-পিস স্যুট পরে, ক্যানডেল হাতে নিয়ে, ‘Good Evening!’ বলে হাজির হন!কালো টুপি, চকচকে জুতা, হালকা জেল দেওয়া চুল—ভ্যাম্পায়ার হলেও স্টাইল যেন হিরোর মতো! দাঁত লাগিয়ে, লালচে চোখ করে, কালো হ্যাট মাথায় দিয়ে, বড় কালো কোট পরে নিজেকে রক্তচোষা বানিয়ে তুলুন।

ভ্যাম্পায়ার সিনেমা দেখতে পারেন: Nosferatu থেকে Twilight, Interview with the Vampire থেকে Hotel Transylvania—সবই চলবে। বন্ধুদের নিয়ে মজা করে দেখতে পারেন আড্ডার সাথে। অথবা নিজে একাই দেখে শিউরে উঠতে পারেন ভয়ে। তবে ঘুমাতে যাওয়ার সময়- সাবধান…..!

রক্তের মত দেখতে পানীয় (জুস): ব্ল্যাক চেরি শরবত বা স্ট্রবেরি জুস দিয়ে রক্তের মতো অনুভূতি করে মুখে মেখে নিতে পারেন! হাতে কাঁচের গ্লাসেও রক্ত বর্ণের জুস নিয়ে রাখতে পারেন।

ড্রাকুলা বুদ্ধিমত্তা প্রতিযোগিতা: কে সবচেয়ে বেশি ভ্যাম্পায়ার তথ্য জানে? আয়োজন করুন হরর নাইট। অবশ্য এ জন্য আপনাকেও ড্রাকুলা সম্পর্কে গভীর ধারণা থাকতে হবে। বলা যায়, ড্রাকুলা সাহিত্য থেকে জেনে নিতে হবে ইতিবৃত্ত।

বাংলাদেশে ড্রাকুলা দিবস?

সত্যি বলতে, বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক পরিপ্রেক্ষিতে ড্রাকুলা একটি ভিনদেশি সংস্কৃতি। তাই ইউরোপ কান্ট্রিগুলোর মতো সেভাবে এখানে ড্রাকুলা পালন করা হয়না। কিন্তু একেবারেই যে পালন করছেনা তাও নয়। আধুনিক যুগের তরুণরাও দিবসটিকে মজা করে পালন করে। আবার ছোট্টো শিশুরাও, যারা মোবাইল ভক্ত, তারাও দিনটিতে মজা করার জন্য ড্রাকুলা পার্টির আয়োজন করে।

ভয় আর মজা, একসাথে!বিশ্ব ড্রাকুলা দিবস এক দারুণ উদাহরণ যে কিভাবে সাহিত্যের এক কাল্পনিক চরিত্র মানুষকে যুগের পর যুগ ধরে মুগ্ধ করে আসছে। এই দিনটিতে আপনি হয়ত রক্ত খাবেন না (সত্যিকারের রক্ত তো নয়!), তবে আপনি ভ্যাম্পায়ার সংস্কৃতির গভীরে ডুব দিতে পারেন।দাঁতগুলো বানিয়ে ফেলুন, হ্যাট পরুন, আর বলে ফেলুন— ‘I vant to suck your knowledge about Dracula!’ হা: হা: হা:

Scroll to Top