‘আল্লহ সহায়, ভয়ের কিছু নেই। বিচারের এই তরী বেয়ে নিয়ে যাব তীরে’ বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ গঠনের পর আজ অ্যাটর্নি জেনারেল ও চিফ প্রসিকিউটরের এজলাস কক্ষে দেয়া সংবর্ধনায় তিনি একথা বলেন।
মঙ্গলবার সকালে ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী এবং অপর দুই সদস্য মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীরকে এজলাস কক্ষে সংবর্ধনা দেয়া হয়। এসময় অ্যাটর্নি জেনারেল মো: আসাদুজ্জামান ও চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সংবর্ধনা বক্তব্য দেন।
সংবর্ধনায় ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘ভয় ভীতির উর্ধ্বে থেকে পক্ষপাতিত্বহীন ভাবে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে এই বিচার করতে সচেষ্ট থাকব। আল্লহ সহায়, ভয়ের কিছু নেই। বিচারের এই তরী বেয়ে নিয়ে যাব তীরে।’
এসময়, ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান অ্যাটর্নি জেনারেল ও চিফ প্রসিকিউটর সহ সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
সংবর্ধনার পর অ্যাটর্নি জেনারেল মো: আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা দেখতে চাই আমাদের এই বিচার নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে যেন কোন প্রশ্ন না ওঠে। আমরা দেখতে চাই এই বিচার যেন হয় আন্তর্জাতিক মানের।’
চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, আজকে সংবর্ধনায় এজলাসে বসা শুরুর মধ্য দিয়ে ট্রাইব্যুনাল-২ এর যাত্রা শুরু হলো। ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে কিছু মামলা এখানে আসবে বলে আশা করছি। আর কিছু নতুন মামলা এখানে দাখিল করবো। ইনশাআল্লাহ, বিচারের অগ্রগতি দেশবাসী দেখতে পাবে।
গত ৮ মে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীকে চেয়ারম্যান করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ গঠন করে সরকার। এই ট্রাইব্যুনালের সদস্য পদে নিয়োগ পান অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং মাদারীপুরের জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর। এসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২–এর চেয়ারম্যান ও সদস্যরা হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকের প্রাপ্য বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা পাবেন।
এ ছাড়া প্রজ্ঞাপনে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার, বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বিদ্যমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার, তার দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছে বলে শত শত অভিযোগ জমা পড়ে। জাজ্জ্বল্যমান এসব অপরাধের বিচার অনুষ্ঠিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।