বাংলাদেশ অস্থিতিশীল হলে দায়ভার জামায়াত-শিবিরকে নিতে হবে: ছাত্রদল | চ্যানেল আই অনলাইন

বাংলাদেশ অস্থিতিশীল হলে দায়ভার জামায়াত-শিবিরকে নিতে হবে: ছাত্রদল | চ্যানেল আই অনলাইন

‘মব’ সৃষ্টিসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশ অস্থিতিশীল হলে এর পুরো দায়ভার জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, জনমনে অস্থিরতা সৃষ্টির অপচেষ্টা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্টের প্রতিবাদে আজ সোমবার ১৪ জুলাই দুপুরে নয়াপল্টন থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে শাহবাগে আসেন ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা।

বিক্ষোভ মিছিল শেষে সন্ধ্যায় শাহবাগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ছাত্রদল সভাপতি এ কথা বলেন।

ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ছাত্রদলের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে বড় ধরনের কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি। ছাত্রদল ঢাকা, জগন্নাথ, জাহাঙ্গীরনগর, চট্টগ্রাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব ক্যাম্পাসে ‘সহনশীলতার রাজনীতি উপহার’ দিয়ে চলেছে। সেখানে প্রতিনিয়ত ‘মব’ চললে ছাত্রদল শান্ত থাকবে না, সারা দেশে রাজপথে এর প্রতিবাদ জানাবে। যদি বাংলাদেশ অস্থিতিশীল হয়, এর পুরো দায়ভার জামায়াত-শিবিরকে নিতে হবে।

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙারি পণ্যের ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে হত্যার ঘটনায় ছাত্রশিবির কোনো ক্যাম্পাসে কেন মিছিল করেনি, সেই প্রশ্ন রাখেন ছাত্রদল সভাপতির। তিনি বলেন, ‘সাম্য ও পারভেজ হত্যার বিচারের দাবিতেও তারা কোনো ক্যাম্পাসে মিছিল করেনি। এটা দ্বারা প্রমাণিত হয়, ১৯৭১ সালে তারা যেভাবে ছাত্র সংঘের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল, মা–বোনদের ইজ্জতহানি করেছিল, সেই একই ধারায় আজও তারা গুপ্ত রাজনীতি অব্যাহত রেখেছে।’

ছাত্রদল সভাপতি বলেন, জুলাই-আগস্টের গণ–অভ্যুত্থানে শিবিরের এক-দুজন সমন্বয়ক ছাড়া রাজপথের আন্দোলনে আর কারও অংশ নেওয়ার কোনো তথ্য নেই।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘রাজপথে তারা কোনো ভূমিকা পালন করেনি। আজ থেকে ১০-১৫ বছর পরে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সহযোগিতায় বাংলাদেশে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ যদি আবারও পুনর্বাসন হয়, সেদিন শিবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে। তারা সেদিন পুলিশ হত্যাসহ মব সৃষ্টির দায় ছাত্রদল ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর চাপিয়ে দেবে। তাঁরা কোনো দায়ভার বহন করবে না।’  এ সময় তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কটুক্তির জবাব অক্ষরে অক্ষরে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেন।

এর আগে বেলা দুইটার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন ছাত্রদলের বিভিন্ন শাখার নেতা–কর্মীরা। সেখানে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগরসহ রাজধানীর নানা বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, থানাসহ বিভিন্ন ইউনিটের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী উপস্থিত হন।

পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালনে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছাড়াও বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান নেন ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা। তাঁদের হাতে ছিল ব্যানার ও ফেস্টুন, মাথায় ছিল দলীয় ও জাতীয় পতাকা। এ সময় ছাত্রদল নেতা–কর্মীদের স্লোগানে নয়াপল্টন এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে। নেতা-কর্মীরা ‘জামায়াত–শিবির রাজাকার, এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়’, ‘জিয়াউর রহমানের বাংলায়, রাজাকারের ঠাঁই নাই’, ‘রাজাকার আর স্বৈরাচার, মিলেমিশে একাকার’, ‘পিন্ডি যাবে রাজাকার, দিল্লি গেছে স্বৈরাচার’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

বেলা ২টায় মিছিল শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সেটি শুরু হয় বেলা সাড়ে তিনটার দিকে। মিছিলটি পল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে কাকরাইল, মৎস্য ভবন, জাতীয় প্রেসক্লাব, কার্জন হল, টিএসসি হয়ে শাহবাগে এসে শেষ হয়। সেখানে পৌনে পাঁচটার দিকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা। অবরোধের কারণে শাহবাগ মোড়ে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় এবং অনেক যাত্রী গন্তব্যে পৌঁছাতে হেঁটেই রওনা দেন।

এই অবরোধের ফলে মৎস্য ভবন, নিউমার্কেট, কারওয়ান বাজারসহ আশপাশ এলাকার সড়কে তীব্র যানজট দেখা দেয়। ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান করার পর কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শেষ হয়। সন্ধ্যা ৬টার দিকে কর্মসূচি শেষ করে ছাত্রদল নেতা–কর্মীরা শাহবাগ মোড় ছেড়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে থাকে।

Scroll to Top