পোশাকশিল্পে জ্বালানি রূপান্তরে সহায়তায় সুইসকন্ট্যাক্টের চ্যালেঞ্জ ফান্ড | চ্যানেল আই অনলাইন

পোশাকশিল্পে জ্বালানি রূপান্তরে সহায়তায় সুইসকন্ট্যাক্টের চ্যালেঞ্জ ফান্ড | চ্যানেল আই অনলাইন

সুইডেন দূতাবাসের সহায়তায় সুইসকন্ট্যাক্ট বাংলাদেশ চলতি মাসের শেষে ইন্সপায়ার চ্যালেঞ্জ ফান্ডের প্রথম ধাপ চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইন্সপায়ার (ইনেশিয়েটিভ টু স্টিমুলেট প্রাইভেট ইনভেস্টমেন্ট ফর রিসোর্স এফিসিয়েন্সি) উদ্যোগের লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও শক্তি-দক্ষতার ব্যবহার বাড়ানো।

সোমবার (১৯ মে) ঢাকার একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত উচ্চ-পর্যায়ের এক শিল্প পরামর্শ কর্মশালায় এই ঘোষণা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে সুইডিশ দূতাবাস, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, এইচঅ্যান্ডএম, ইন্ডিটেক্স, মার্কস অ্যান্ড স্পেন্সারসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবসায়ীরা অংশগ্রহণ করেন।

এই উদ্যোগের মাধ্যমে সবুজ জ্বালানিতে বেসরকারি বিনিয়োগে ঝুঁকি হ্রাস করতে ফ্যাক্টরিগুলোকে প্রকল্প ব্যয়ের সর্বোচ্চ ৪০% পর্যন্ত অনুদান দেওয়া হবে, বাকি ৬০% ব্যয় ফ্যাক্টরিগুলোকে যৌথভাবে বহন করতে হবে। প্রকল্পভেদে চ্যালেঞ্জ ফান্ডের অনুদানের পরিমাণ এক থেকে পাঁচ লক্ষ সুইডিশ ক্রোনার।

সুইসকন্ট্যাক্ট বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হেলাল হোসেন অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যের পর সুইডেন দূতাবাসের ইনক্লুসিভ ইকোনমিক ডেভেলপমেন্টের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার ইকরামুল এইচ. সোহেল কর্মশালায় বক্তব্য দেন।

সুইডিশ দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন মিস মারিয়া স্ট্রিডসমান তার বক্তব্যে সম্মিলিত প্রচেষ্টার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের পোশাক খাত অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি, এবং এর সবুজ রূপান্তর পরিবেশ ও সমাজের ওপর দীর্ঘস্থায়ী ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ইন্সপায়ার-এর মাধ্যমে আমরা এমন কার্যকর সমাধানকে উৎসাহিত করতে চাই যা কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে ভূমিকা রাখবে।

এই চ্যালেঞ্জ ফান্ড কোনো ঋণ নয়, এটি একটি পারদর্শিতাভিত্তিক অনুদান যেটা মাঝারি ও অপেক্ষাকৃত ছোট কারখানাগুলো ও এনার্জি সার্ভিস প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দূরত্ব পূরণে সহায়তা করবে। সুইসকন্ট্যাক্টের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর সৈয়দা ইসরাত ফাতেমা বলেন, আমরা চাই ফ্যাক্টরিগুলো অনুধাবন করুক যে টেকসই হওয়া কেবল খরচ নয়, এটি একটি প্রতিযোগিতামূলক সুবিধাও।

ইন্সপায়ার-এর টিম লিডার বিদৌরা তাহমিন খান জানান, এই অনুদান দুটি ধাপে ভাগ করা হয়েছে: ছোট প্রকল্প (৬–১২ মাস) এবং মাঝারি প্রকল্প (২৪ মাস পর্যন্ত), যার মাধ্যমে পরীক্ষামূলক প্রকল্প ও বড় ধরনের প্রভাব রাখতে পারে এমন উদ্যোগকে সহায়তা দেওয়া হবে।

চলতি মে মাসের শেষ দিকে ধারণাপত্র চেয়ে জন্য প্রথম ধাপ শুরু করা হবে। ধারণাপত্র জমা দেওয়ার জন্য আগ্রহী কারখানাগুলো চার সপ্তাহ সময় পাবে। সৌর বিদ্যুৎ, বায়োমাস প্রযুক্তি, শক্তি-সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি বা পানি সংরক্ষণ ইত্যাদি ক্ষেত্রগুলো অগ্রাধিকার পাবে। ধারণাপত্র অবশ্যই বিদ্যুতের ৪০% নবায়নযোগ্য উৎস থেকে পাওয়ার জাতীয় লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে মিল থাকতে হবে। ইন্সপায়ার-এর পরিবীক্ষণ ও ফলাফল মূ্ল্যায়ন ব্যবস্থাপক আজমাল হুদা জানান, কারিগরি দিক থেকে সক্ষম, জেন্ডার-সমন্বিত নীতিমালা অনুসরণকারী, এবং দ্বৈত অনুদানবিহীন প্রকল্পগুলো অগ্রাধিকার পাবে। কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন সুইসকন্ট্যাক্ট-এর কর্মকর্তারা।

আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলো জ্বালানি রূপান্তরের এই উদ্যোগের প্রতি দৃঢ় সমর্থন প্রকাশ করেছে। এইচঅ্যান্ডএম-এর একজন প্রতিনিধি বলেন, আমরা আমাদের সরবরাহকারীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করি—এনার্জি অডিট করি এবং যৌথভাবে অর্থায়নের মাধ্যমে কার্যকারিতা বাড়াই। ইন্ডিটেক্স ২০২৭ সালের মধ্যে তাদের সরবরাহ শৃঙ্খলে কার্বন নিঃসরণ কমানোর রোডম্যাপ তুলে ধরে ফ্যাক্টরিগুলোকে নিরাপদ প্রযুক্তি গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।

Scroll to Top