Last Updated:
আগে ছবি তুলতে দক্ষতা দরকার ছিল। একসময় লক্ষাধিক টাকা খরচ করে কেনা ফটো-প্রিন্টিং মেশিন আজ অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে।

ডিজিটাল যুগে কোণঠাসা শিলিগুড়ির পুরনো ফটোস্টুডিও!
শিলিগুড়ি, ঋত্বিক ভট্টাচার্য : একসময় শহরের গলিপথে হাঁটলেই ভেসে আসত পরিচিত ডাক, “দাদা, একটা ছবি তুলে দিন তো”। সেই ডাক এখন কেবলই স্মৃতিতে। যেখানে একসময় ঝুলত নানান ফ্রেমে বাঁধা ছবি, সেখানে আজ নীরবতা। স্টুডিওর আলো নিভে গিয়েছে, রয়ে গিয়েছে শুধু অতীতের ছায়া।
শহরের বহু পুরনো ফটো স্টুডিও এখন বন্ধ হওয়ার মুখে। আবার কেউ কেউ বছরের পর বছর ধরে চালালেও ডিজিটাল যুগে টিকে থাকার লড়াইয়ে হোঁচট খাচ্ছে। একসময় ক্যামেরা মধ্যবিত্তের সাধ্যের বাইরে ছিল। তাই বিয়ে, অন্নপ্রাশন, এমনকি ঠাকুমার সঙ্গে নাতি-নাতনিদের ছবি তুলতে ভিড় জমত স্টুডিওতে। সেসব সাদা-কালো মুহূর্ত আজও শোভা পায় বাড়ির পুরনো অ্যালবামে।
প্রযুক্তি বদলেছে, বদলেছে মানুষের অভ্যাসও। আজ স্টুডিওর ইন-হাউস কাজের চেয়ে আউটডোর ফটোশুট বেশি জনপ্রিয়। বিয়ে-বাড়ি, অন্নপ্রাশন বা জন্মদিনের অনুষ্ঠানে মোটা অঙ্ক খরচ করতে পিছপা নন অনেকে। কিন্তু স্টুডিওর মালিকদের আক্ষেপ, ওইটুকুই আয়ের ভরসা।
ক্ষুদিরাম পল্লীর প্রায় ৬৪ বছরের পুরনো একটি স্টুডিও চালাচ্ছেন সুজিত কর্মকার। তাঁর বাবা বর্ধমান থেকে ফটোগ্রাফি শিখে এসে খুলেছিলেন দোকান। ছোটবেলা থেকেই বাবার সঙ্গে ক্যামেরা হাতে নেন সুজিত। তিনি বলছেন, “আগে ছবি তুলতে দক্ষতা দরকার ছিল। এখন ফোনে ছবি তুলে সবাই খুশি।” একসময় লক্ষাধিক টাকা খরচ করে কেনা ফটো-প্রিন্টিং মেশিন আজ অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে।
অন্যদিকে, শহরের আরেক ৬৫ বছরের পুরনো স্টুডিওর মালিক সঞ্জয় বসাক জানালেন, সময়ের সঙ্গে বদল আনতে হয়েছে কাজের ধরণে। এখন মোবাইলের ব্যাক কভার, টি-শার্ট, কাপ, সবেতেই ছবি প্রিন্টের কাজ ভালো চলছে। সেইসঙ্গে রয়েছে বিয়ে, পার্টি বা আউটডোর শুটিংয়ের অর্ডারও।
শহরের এই স্টুডিও-যুগ হয়তো হারিয়ে যাবে খুব শীঘ্রই। কিন্তু পুরনো অ্যালবামের পাতা উল্টালে আজও ভেসে ওঠে সেই ডাক, “দাদা, একটা ছবি তুলে দিন তো…”
Kolkata [Calcutta],Kolkata,West Bengal
August 08, 2025 11:29 PM IST