এ বাড়তি মজুরির সঙ্গে রয়েছে ক্ষমতা অপব্যবহারের সুযোগ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা ছেড়ে ক্ষমতাকাঠামোর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য কেউ কেউ আমলা হয়েছেন বলে তাঁদের মুখ থেকেই শুনেছি। তবে তাঁরা বেশির ভাগই চাকরি জীবনে সৎ ছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ছিল কম।
এ অপশাসনের দেশে ক্ষমতাকাঠামোর সঙ্গে যুক্ত থাকলে একদিকে যেমন দুর্নীতি করার সুযোগ তৈরি হয়, তেমনি সামাজিক ও রাজনৈতিক অনেক হয়রানি থেকেও মুক্ত থাকা যায়। এখন এ ক্ষমতাকাঠামোর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন ডাক্তার ও প্রকৌশলীরা। দুর্নীতি তো করছেনই। সুশাসন প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতি দমন ও ক্ষমতার অপব্যবহার কমানো গেলে বিসিএসের কয়েকটি ক্যাডারের প্রতি যে সীমাহীন মোহ, তা কেটে যাবে। এসব ক্যাডার চাকরির বাজারে যে ভারসাম্যহীনতা তৈরি করেছে, তা–ও অনেকটা কমে আসবে।
আমাদের গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিতে হবে একজন শিক্ষক ও আমলা যখন একই সঙ্গে বাজারে উপস্থিত হন, তাঁদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে যেন বড় পার্থক্য না থাকে। পার্থক্যের উৎসগুলো বিবেচনায় নিয়ে বৈষম্য কমিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে।
সাম্প্রতিক সময়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রাথমিক উৎস ছিল সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটাপদ্ধতি। এখনই সময় সমযোগ্যতার ক্ষেত্রে প্রকৃত বেতন-বৈষম্য দূর করা। যদি তা করা না হয়, তাহলে এ প্রজন্ম, যারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করে জীবন দিয়েছে, চাকরিতে ঢুকে বিদ্যমান বৈষম্যের বিরুদ্ধে অবশ্যই রুখে দাঁড়াবে। নতুন পে কমিশন এসব বিষয় গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করবেন বলে আশা করছি।
ড. মো. মাইন উদ্দিন
অধ্যাপক, ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়