জনপ্রিয় অভিনেত্রী হুমায়রা হিমুর হঠাৎ প্রস্থানের খবর প্রকাশ হওয়ার পর ফেসবুকের পাতা যেন শোক বইয়ে পরিণত হয়েছে। শোবিজ অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। জনপ্রিয় সব তারকারা ফেসবুকে তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণা করছেন।
অভিনয়শিল্পী সংঘ
অভিনয়শিল্পী সংঘের দেওয়া বিবৃতি ফেসবুকে শেয়ার করে রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদসহ বেশ কজন জনপ্রিয় তারকা হিমুর অকাল মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন।
তাতে লেখা হয়েছে, ‘অভিনয়শিল্পী হোমায়রা হিমু আমাদের ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন। আজ বিকেল ৪টা ৪৬ মিনিটে হিমুর একজন বন্ধু ও মিহির হাসপাতালে তাকে নিয়ে আসেন। পৌঁছানোর পর উপস্থিত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার গলায় হালকা দাগ দেখতে পাওয়ায় ডাক্তার পুলিশ ডাকেন।পুলিশ ডাকাতে সেই বন্ধু চলে গেলে এখন পুলিশ তাকে খুঁজছে। মৃত্যুর কারণ পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এর পর বিস্তারিত জানা যাবে। অভিনয়শিল্পী সংঘের প্রতিনিধিগণ হাসপাতালে উপস্থিত আছেন। হাসপাতাল এবং দাফন সহ যাবতীয় প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সবকিছু অভিনয়শিল্পী সংঘ সম্পন্ন করবে।
চিত্রনায়িকা নুতন
যা করেছে তা করার জন্য সে আসে নি- যা করার জন্য এসেছে তা করলে ভালো হতো। অনেক ব্যথা, যন্ত্রণা, লাঞ্চনা সহ্য করে- আজ অবধি আয়নার দিকে তাকায়ে শুধু এটাই ভাবি। আজকের দিন টাও আমার অর্থবহ করতে হবে। আমার নিজের জন্য হলেও চলতে হবে। সোজা হয়ে সম্মুখে আয়নার দিকে তাকাই। ঘুরে গিয়ে আর তাকাই না। কতো চোখের পানি শুধু হাত দিয়ে মুছেছি তা স্বয়ং আল্লাহ জানে। রুমাল-টিস্যু ব্যবহার করতাম না কারন ভাবতাম নিজের পানি নিজের শরীরেই থাকুক । শরীর থেকে পরে আবার শরীরেই জমুক। ‘‘বড় পর্দায় কাজ করতাম কলিজাও বড় আছে। হেরে যাবো না।’’
এগুলো বলার একটাই কারণ আর যেনো কেহ ‘‘হিমু’’ না হয়। এরকম আরও অনেক হয়েছে এর আগে মিতানুর। যত বড় ব্যথা তত বড় সমাধান। আত্মহত্যা সমাধান না৷ আত্মহত্যা নিজের কাছে নিজের ভয়- নিজের কাছে নিজের হেরে যাওয়া। মেয়েটা কে আমি চেহারায় চিনি, দেখেছি, তবে খুব ভালো জানাশুনা নেই। ৩/৪ টা নাটক দেখে ভেবেছিলাম মেইনস্ট্রিম চলচ্চিত্রের অভিনেত্রী হলে খারাপ হতো না। হয়তো ছবিও করেছে। চোখ আর গলায় ধার অনেক। সুন্দরী আবার ভালো অভিনেত্রী। সামনে হয়তো অনেক ভালো কিছু করতে পারতো বা করতো করার জন্য যেহুতু এ জগতে আসছে অবশ্যই করতো। তবে সে যা করেছে তা করার জন্য সে আসে নি- তবে আজ যা করলো তার উত্তর জানা নেই।
আত্মহত্যা বা খুন যাইহোক তার প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা আল্লাহ তাকে ভালো রাখুক। একটা রাগের মাথায় জ্ঞান দেই। সিনিয়র হিসেবে। অতিরিক্ত ব্যথা যখন নিজের কাছে নিজের হবে তখন সারা দুনিয়া ভুলে নিজেকে সময় দাও। সব ছেড়ে দাও; সব। দেখবা উত্তর পেয়ে যাবা। বেঁচে থাকার চেয়ে বড় উত্তর আর কিছুতে নেই।
অভিনেত্রী বন্যা মির্জা
আমরা কে কার খোঁজ রাখি!
আমাদের একটা জীবনে কতশত মানুষের সাথে চলি, বলি। তবুও কি জানতে পারি তাঁর সব কিছু? বা কোন কিছু? খোঁজ রাখা নিয়ে কথা যে কেউ বলতেই পারেন তার নিজের মতো করে।
সহকর্মীর আত্মার শান্তি কামনা করতে পারবো না! এটা কেমন কথা! এসবই নিষ্ঠুরতা। অন্য কেউ খোঁজ নিলো কিনা তা না ভেবে নিজের কথা মনে করি, আমি কি করেছিলাম!
হিমু জীবন ভালোবাসতো, নানা রকম গয়না বানানোর শখ ছিলো তার। সুন্দর করে নিজের বাড়িটিও সাজিয়েছিলো সে। নিজের মতো তার একটা জগৎ ছিলো।
মৃতকে নিয়ে কটু কথা না বলে তাঁকে সন্মান জানান।
অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম
হুমায়রা হিমুর আত্মার শান্তি হোক..
অভিনেত্রী রুনা খান
হিমু.. তোমার আত্মার শান্তি কামনা করি..
নির্মাতা আলিভ আহেমদ
ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন। গভীর শোক জানাচ্ছি। আমরা মিডিয়াতে এক সাথে কাজ শুরু করেছিলাম। শুরুর দিকে অসংখ্য স্মৃতি আমাদের। মনে পড়ে যাচ্ছে সব।
চিত্রনায়িকা নিপুণ
আরটিভিতে প্রচারিত মহব্বত ব্যাপারী নাটকে একসঙ্গে অভিনয় করেছিলেন নিপুণ ও হুমায়রা হিমু। সেই নাটকের একটি রপোস্টার শেয়ার করে শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারন সম্পাদক নিপুণ আক্তার।
অভিনেত্রী শামীমা তুষ্টি
এখন হিমুকে নিয়ে সবার বড় বড় কথা দেখবো??
কেন চলে গেলা লেখা দেখবো !!
অনেক আহা উহু দেখবো !!
এটাই খুবই যন্ত্রণা দেয় !! বেঁচে থাকতে কেউ খবরও নেয়না !!
কাজের জন্য কেউহয়তো তাকে ডাকতেন না !!
কাজের জন্য ফোন দিলে নিশ্চই ফোনটা ধরতেন না !!
খোজঁ নেয়া তো দুরের কথা !!
কেমন যেনো আমরা সবাই মায়া কান্না লোক দেখানোতে বিশ্বাসী হয়ে উঠেছি !!
ভালো থেকো হিমু।
অভিনেত্রী সুষমা সরকার
হুমায়রা হিমু….
মানতে পারছি না…
কেন???
অভিনেত্রী লারা লোটাস
ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
অবাক হই বেঁচে থেকে এই মিডিয়ার কারো প্রতি কারো কোন সন্মান নেই ভাইয়া। মরে গেলে তখন অসময়ে চলে গেলেন, আরো কতো কতো কথা বলি আমরা। জীবিত কত হাজারো মানুষের কাজ , ফোন কল , মেসেজের উত্তর পর্যন্ত আমরা দিই না, দিচ্ছি না, অথচ মৃত্যু হলেই মৃত ব্যক্তিকে নিয়ে সবাই কত কিছু করি। লোকদেখানো ভালোবাসাটা এখানে অনেক বেশী। খারাপ সময়ে কেউ কাউকে মেন্টাল সাপোর্ট বা কোন সাপোর্ট ই দেইনা। আসলে মৃত্যু না হলে আমরা কাউকে মূল্য দিই না। বেঁচে থাকতে পাশে না থাকতে পারলে মরে গেলে তাকে আর ফিরিয়ে আনা যায় না…
সাংবাদিক মাহমুদ মানজুর
হিমু আর নেই। এটাই বড় সত্যি। কেন বা কিভাবে তিনি নেই হলেন, সেটা আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। তবে এটুকু বুঝি, যে কোনও মৃত্যু মুহূর্তে নয়, মূলত হয় বহুদিন ধরে। বহুদিন মানে, বহু বহু দিন ধরে, একটু একটু করে সে মরে যায় কিংবা মেরে ফেলে।
যে মৃত্যুর দায় সমানভাবে তার এবং সবার। আমি হিমুর এই মৃত্যুর দায় নিলাম।
আহা… লাউয়ের ডগার মতো তুলতুলে একটা ডাগরচোখা মেয়ে, শূন্য দশকের শুরুর দিকে এসেছিলো আমাদের কাছে, আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন নিয়ে। তার এই পরাজয়ের দায় আমি এড়াবো কেমন করে? তার পোস্টমর্টেমের আগে তো আমার রিমান্ড হওয়া জরুরি।
এই স্ট্যাটাসের কমেন্ট বক্সে জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী দিনাত জাহান মুন্নি লিখেছেন, ‘অনেক ধন্যবাদ মানজুর ভাই, ভীষণ সত্যি, ভীষণ সত্যি।’
জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা তমা মির্জা লিখেছেন, ‘সহমত। দায় আমাদেরও।’
নির্মাতা আবু হায়াত মাহমুদ
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
হুমায়রা হিমু!!!
আমদের অবকাঠামো, শিল্প চর্চার মাধ্যম, এমন নানা বিষয়ে কথা বলতে ইচ্ছে হচ্ছে। আবার ভাবি লাভ নেই… সেটা বুঝার দিনও শেষ হলো বলে….