আটকে পড়া কাতার প্রবাসীদের ফেরা অনিশ্চিত

আটকে পড়া কাতার প্রবাসী

করোনা ভাইরাসের কারণে দেশে ফিরে আটকে পড়া ১২ সহস্রাধিক কাতার প্রবাসী শ্রমিকের ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। তাদের ৯৫ শতাংশের কাতারে আকামা বা কাজের অনুমতির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। চার মাস আগে রি-এন্ট্রি পারমিটের আবেদন করেও কোনো সদুত্তর পাচ্ছে না। এখন আর আবেদন নেওয়া হচ্ছে না।

কাতার ফেরত যাওয়ার দাবিতে এখন পর্যন্ত পাঁচবার জাতীয় প্রেসক্লাব ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে বিক্ষোভ করলেও কাটেনি অনিশ্চয়তা। ছুটিতে দেশে এসেছিলেন তারা। বেশির ভাগেরই কাতারের আইডির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। তাদের দাবি কাতার সরকার রি-এন্ট্রি পারমিট দ্রুততর করুক। তারা চান, কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় এ সমস্যার দ্রুত নিষ্পত্তি হোক। তাদের কাতারি আইডি আছে এবং রিটার্ন টিকিটও আছে। কিন্তু রি-এন্ট্রি পারমিট মিলছে না। অন্যান্য দেশের প্রবাসীরা ইতিমধ্যে কাতারে যেতে পারলেও বাংলাদেশিরা সে সুযোগ পাচ্ছে না।

মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কর্মীরা বলেন, সরকারের প্রতি আমাদের অনুরোধ কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে যেভাবে সৌদি প্রবাসীদের পাঠানো হয়েছে, তেমনিভাবে আমাদেরও কাতার পাঠানো হোক। ভারত ও নেপালিদেরকে রি-এন্ট্রি পারমিট হয়ে গেছে, আমাদের হয়নি। আমাদের ভিসার মেয়াদ নেই। আমাদের আকুল আবেদন, আমাদের না পাঠাতে পারলে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করুন।

কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. জসীম উদ্দিন টেলিফোনে জানান, কাতারের সঙ্গে বিমান চালু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত প্রায় ৬ হাজার বাংলাদেশি কর্মী কাতারে ফেরত গেছেন। বাকিদের ফেরত আনতে কাতার সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে। মূলত তারা ধাপে ধাপে কর্মীদের ফিরিয়ে নেবে বলে জানিয়েছে। শুরুতে টেকনিক্যাল কাজে দক্ষদের নিয়ে এসেছে। বয়স্কদের করোনা ঝুঁকি বেশি বলে কর্মীর বয়সটাও বিবেচনা করছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। কর্মীদের বাধ্যতামূলকভাবে ১৫ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলেছে। কিন্তু সেখানে হোটেল স্বল্পতাও রয়েছে। জানুয়ারির মধ্যে সব কর্মীকে ফেরত নেওয়ার কথা জানিয়েছে তারা। তারা ওখানে প্রত্যেকটা কোম্পানিতে খোঁজ করে জানছে কাদের কাদের কাজ এখনই হবে। যারা যেতে পারছেন না, হয়তো আস্তে আস্তে যাচ্ছে বা যাওয়া শুরু হয়েছে।

মাসুদ বিন মোমেন বলেন, এমন কোনো অবস্থা নেই যে, অন্যান্য প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমূহের লোকরা আগে যাচ্ছে বা আমাদেরকে যেতে দিচ্ছে না, এটা সত্য নয়। কারণ ওখানে যে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত আছেন, পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত আছেন তাদের থেকেও খবর নেওয়া হয়েছে।

কাতার বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলার ড. মোহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, তিন মাস পরবর্তী সময়ে কাতার আইডির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে বা ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে প্রতিদিনের জন্য যে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ জরিমানা গুনতে হতো সেটি এখন থেকে আর লাগবে না। আবেদন করে যাদের অনুমতি মেলেনি, তারা এক মাস পরে আবারও আবেদন করতে পারবেন।

এম এন বাংলা
প্রবাস বাংলা ডেস্ক

Scroll to Top